অসমাপ্ত আত্মজীবনী

fz tech ltd
0

 অসমাপ্ত আত্মজীবনী


 
উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
অসমাপ্ত আত্মজীবনী
অসমাপ্ত আত্মজীবনী.jpg
অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইয়ের প্রচ্ছদ
সম্পাদকশামসুজ্জামান খান
লেখকশেখ মুজিবুর রহমান
প্রচ্ছদ শিল্পীসমর মজুমদার
দেশ বাংলাদেশ
ভাষাবাংলা
বিষয়ইতিহাস, রাজনীতি
ধরনআত্মজীবনী
প্রকাশকদি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড
প্রকাশনার তারিখ
১২ জুন, ২০১২
পৃষ্ঠাসংখ্যা৩৩০ (আত্মজীবনী ২৮৮)
আইএসবিএন৯৭৮৯৮৪৫০৬০৫৯২
পরবর্তী বইকারাগারের রোজনামচা (২০১৭) 
পাণ্ডুলিপির একটি খাতায় জেল কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষর।

অসমাপ্ত আত্মজীবনী শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মজীবনী সংকলন। ২০১২ সালের জুনে এ বইটি প্রকাশিত হয়।[১] এ পর্যন্ত ক্রমান্বয়ে ইংরেজিউর্দুজাপানিচিনাআরবিফরাসিহিন্দিতুর্কিনেপালিস্পেনীয়অসমীয়াইতালীয়,মালয়কোরীয়রুশ ,মারাঠি ও সর্বশেষ গ্রীক ভাষায় বইটির অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

সংকলনের ইতিহাস[সম্পাদনা]

শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের অনেক সময়ই কেটেছে জেলখানায় বন্দি অবস্থায়। ১৯৬৬-৬৯ সালে তিনি আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাজবন্দি ছিলেন। এ নিরিবিলি নিরানন্দ সময়গুলোতে বন্ধুবান্ধব, সহকর্মী এবং সহধর্মিণীর অনুপ্রেরণায় তিনি জীবনী লেখা শুরু করেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের বাড়িটি পাক হানাদার বাহিনীর দখলে ছিল। এই বাড়িতেই একটি ড্রেসিংরুমের আলমারির উপরে অন্যান্য খাতাপত্রের সাথে শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা এই আত্মজীবনী, স্মৃতিকথা, ডায়েরি, ভ্রমণ কাহিনীও ছিল। পাকিস্তানি বাহিনী সমগ্র বাড়িটি লুটপাট ও ভাঙচুর করলেও এই কাগজপত্রগুলোকে মূল্যহীন ভেবে অক্ষত রেখে যায়।

পঁচাত্তরের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর বাড়িটি জিয়া সরকার কর্তৃক সিলগালা করে দেওয়া হয়। ১৯৮১ সালে বাড়িটি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়। এ সময় ঐ বাড়িতে শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিকথা, ডায়েরি ও চীন ভ্রমণের খাতাগুলো খুঁজে পাওয়া গেলেও তাঁর আত্মজীবনীর পাণ্ডুলিপিটি পাওয়া যায় নি; শুধু কয়েকটি ছেঁড়া-উইপোকায় কাটা টাইপ করা ফুলস্কেপ কাগজ পাওয়া যায়।

দীর্ঘদিন পর ২০০৪ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের এক ভাগ্নে অতি পুরানো-জীর্ণপ্রায় এবং প্রায়ই অস্পষ্ট লেখার চারটি খাতা শেখ হাসিনাকে এনে দেন। তিনি এই খাতা চারটি শেখ মুজিবের আরেক ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মণি'র অফিসের টেবিলের ড্রয়ার থেকে সংগ্রহ করেন। এই লেখাগুলোকে বঙ্গবন্ধু হারিয়ে যাওয়া পূর্বোক্ত আত্মজীবনী হিসেবে সুনিশ্চিত করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে শেখ মণিকে টাইপ করার জন্য এগুলো দেওয়া হয়েছিল। পরে এগুলো বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খানের সম্পাদনায় গ্রন্থাকারে অসমাপ্ত আত্মজীবনী নামে ২০১২ সালের জুনে প্রকাশ করা হয়। 'দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড'-এর পক্ষে এ গ্রন্থটি প্রকাশ করেন মহিউদ্দিন আহমেদ। বইটির প্রচ্ছদ এঁকেছেন শিল্পী সমর মজুমদার এবং কম্পিউটার গ্রাফিক্স ও স্ক্যান করেছেন ধনেশ্বর দাশ চম্পক। এতে মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ৩২৯।

আত্মজীবনী[সম্পাদনা]

বইটিতে আত্মজীবনী লেখার প্রেক্ষাপট, লেখকের বংশ পরিচয়, জন্ম, শৈশব, স্কুল ও কলেজের শিক্ষাজীবনের পাশাপাশি সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, দুর্ভিক্ষ, বিহার ও কলকাতার দাঙ্গা, দেশভাগ, কলকাতাকেন্দ্রিক প্রাদেশিক মুসলিম ছাত্রলীগ ও মুসলিম লীগের রাজনীতি, দেশ বিভাগের পরবর্তী সময় থেকে ১৯৫৪ সাল অবধি পূর্ব বাংলার রাজনীতি, কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক মুসলিম লীগ সরকারের অপশাসন, ভাষা আন্দোলন, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা, যুক্তফ্রন্ট গঠন ও নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন, আদমজীর দাঙ্গা, পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের বৈষম্যমূলক শাসন ও প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের বিস্তৃত বিবরণ এবং এসব বিষয়ে লেখকের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার বর্ণনা রয়েছে।[২] আছে লেখকের কারাজীবন, পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি ও সর্বোপরি সর্বংসহা সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেসার কথা, যিনি তাঁর রাজনৈতিক জীবনে সহায়ক শক্তি হিসেবে সকল দুঃসময়ে অবিচল পাশে ছিলেন। একইসঙ্গে লেখকের চীন, ভারত ও পশ্চিম পাকিস্তান ভ্রমণের বর্ণনাও বইটিকে বিশেষ মাত্রা দিয়েছে।[২]

অনুবাদ ও অন্যান্য সংস্করণ[সম্পাদনা]

দেশ বিদেশের বঙ্গবন্ধু ও বাংলাপ্রেমিকরা একক বা যৌথভাবে অসমাপ্ত আত্মজীবনী অনুবাদে অবদান রেখে চলেছেন। এ সকল অনুবাদকের মধ্যে কেউ কেউ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে স্ব-উদ্যোগে অনুবাদ করেছেন বা করে চলেছেন। অদ্যাবধি ইংরেজি, উর্দু, জাপানি, চীনা, আরবি, ফরাসি, হিন্দি, তুর্কি, নেপালি, স্পেনীয়, অসমীয়া, রুশ, কোরীয় এবং সর্বশেষ মারাঠি ভাষায় অসমাপ্ত আত্মজীবনীর অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে। মালয় ও ইতালি ভাষায় অনূদিত হলেও তা প্রকাশের অপেক্ষায় আছে।

বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ তালিকা:

ভাষাঐ ভাষায় গ্রন্থের নামঅনুবাদকমোড়ক উন্মোচনের তারিখ
ইংরেজিThe Unfinished Memoirsড. ফকরুল আলম১৮ জুন ২০১২
উর্দুادھوري یادیںইয়াওয়ার আমান২০১৩
জাপানি--কাজুহিরো ওয়াতানাবে২রা আগস্ট ২০১৫
চীনা--চাই শি২৮শে জানুয়ারি ২০১৬
আরবি (ফিলিস্তিন)--মুহাম্মদ দিবাজাহডিসেম্বর ২০১৬
ফরাসিMémoires Inachevésফ্রান্স ভট্টাচার্য২৬শে মার্চ ২০১৭
হিন্দিदास्ताँ और भी हैंপ্রেম কাপুর৮ই এপ্রিল ২০১৭
তুর্কি--আতাতুর্ক সংস্কৃতি ও গবেষণা কেন্দ্র (তুরস্ক)২৭শে মার্চ ২০১৮
নেপালিती अधुरा संस्मरणहरुঅর্জুন বাহাদুর থাপা ও মহেশ পৌড়েল৮ই অক্টোবর ২০১৮
১০স্পেনীয়Memorias Inacabadasমারিয়া হেলেনা বারেরা-আগারওয়াল ও বেঞ্জামিন ক্লার্ক১১ই অক্টোবর ২০১৮
১১অসমীয়াঅসমাপ্ত আত্মজীৱনীড. সৌমের ভারতীয়া ও ড. জুরি শর্মা২৫শে ডিসেম্বর
১২রুশ--ড. ভি নমকিনঅক্টোবর ২০১৯
১৩ইতালীয়অতোবায়োগ্রাফিয়া ইনকমপ্লিতা[৩]আন্না কোক্কিয়ারেল্লা[৪]এখনও প্রকাশিত হয় নি। [৫]
১৪মালয়--কাজ চলছেফেব্রুয়ারি ২০১৯ এ পাণ্ডুলিপি প্রধানমন্ত্রীর নিকট হস্তান্তর [৬]
১৫কোরীয়লি ডং হিউন১ জুলাই ২০২১
১৬মারাঠিঅপূর্ণ আত্মকথাঅপর্ণা ভেলনকার১২ অক্টোবর ২০২১


ইংরেজি অনুবাদ[সম্পাদনা]

ইংরেজি ভাষায় গ্রন্থটির অনুবাদক ড. ফকরুল আলম। ২০১২ সালের ১৮ই জুন বাংলা সংস্করণের সাথে এটিও প্রকাশিত হয়। বাংলাদেশে ইংরেজি ও বাংলা দুই সংস্করণই 'দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড' থেকে প্রকাশিত হয়েছে। ইংরেজি অনুবাদে শিরোনাম দেওয়া হয়েছে The Unfinished Memoirs (দ্য আনফিনিশড মেমোয়ারস)।[৭] ভারতে ইংরেজি সংস্করণটি প্রকাশিত হয়েছে ‘পেঙ্গুইন বুকস ইন্ডিয়া’ থেকে আর পাকিস্তানে ইংরেজি সংস্করণটি প্রকাশ করেছে ‘অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস পাকিস্তান’।[৮]

উর্দু অনুবাদ[সম্পাদনা]

‘অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস পাকিস্তান’ থেকে উর্দুতে এর অনুবাদ প্রকাশিত হয় ২০১৩ সালে। ইয়াওয়ার আমান বাংলা থেকে এটি ادھوري یادیں (আধুরি ইয়াদেঁ) শিরোনামে অনুবাদ করেছেন।[৯][১০][১১]

জাপানি অনুবাদ[সম্পাদনা]

কাজুহিরো ওয়াতানাবে বাংলা থেকে সরাসরি জাপানি ভাষায় বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীটি অনুবাদ করেছেন। ৬০০ পৃষ্ঠার এ সংস্করণটি প্রকাশ করেছে জাপানের শীর্ষস্থানীয় প্রকাশনা সংস্থা "আশাহি শোতেন"। ২রা আগস্ট ২০১৫ তারিখে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শেখ হাসিনার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে অসমাপ্ত আত্মজীবনীর জাপানি অনুবাদের একটি কপি তাকে উপহার দেন। জাপানের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম এনএইচকে’র বাংলা বিভাগের প্রধান অনুষ্ঠান পরিচালক একই সঙ্গে আশাহি শোতেনের প্রেসিডেন্ট এবং অনন্য বাংলাপ্রেমী এই অনুবাদক ইতোপূর্বে তাকেশি হায়াকাওয়ার আমার বাংলাদেশ ও তাদামাসা হুকিউরার রক্ত ও কাদা ১৯৭১ বই দুটি বাংলায় অনুবাদ করেছিলেন, তবে বাংলা থেকে জাপানি ভাষায় এটিই তাঁর প্রথম পূর্ণাঙ্গ অনুবাদ। উল্লেখ্য যে, জাপানে মোড়ক উন্মোচন করে নতুন বইয়ের প্রকাশনা উৎসবের প্রচলন নেই। শুধু নামী লেখকদের বেলায় নতুন বই বাজারে আসার প্রথম কয়েকটি দিন পাঠকদের জন্য নাম স্বাক্ষরের বিশেষ আয়োজন করা হয় এবং অন্যান্য দেশের মতই সংবাদমাধ্যমে নতুন বইয়ের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পাশাপাশি সেই সব বইয়ের কিছু কপি পর্যালোচনার জন্য জমা দেওয়া হয়। সেই দিক থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অসমাপ্ত আত্মজীবনীর অনুবাদ কপির আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর জাপানি প্রকাশনা সংস্কৃতিতে ব্যতিক্রমই বটে।[১২][১৩][১৪]

চীনা অনুবাদ[সম্পাদনা]

চীনা ভাষায় বইটির অনুবাদ করেন বাংলাদেশে চিনের সাবেক রাষ্ট্রদূত চাই শি। ২০১৬ সালের ২৮শে জানুয়ারি গণভবনে বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও অনুবাদক চাই শি। ২০১৪ সালে বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীটির অনুবাদের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। চাই শি ২০০৩-২০০৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত ছিলেন।[১৫][১৬][১৭]

আরবি অনুবাদ[সম্পাদনা]

ঢাকাস্থ ফিলিস্তিন দূতাবাসের উদ্যোগে ফিলিস্তিনি আরবিতে গ্রন্থটির অনুবাদ করেন ফিলিস্তিনের অনুবাদক মো. দিবাজাহ এবং সম্পাদনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুল্লাহ আল মারুফ। ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে কুয়েত থেকে এ সংস্করণটি প্রকাশিত হয়। ২০১৬ সালের ১২ ডিসেম্বর গণভবনে ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. রিয়াদ এন. এ. মালকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে বইটির আরবি সংস্করণের অনুলিপি তাঁর হাতে তুলে দেন।[১৮][১৯]

ফরাসি অনুবাদ[সম্পাদনা]

প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটুট ন্যাশনাল দেস ল্যাঙ্গুয়েজ এট সিভিলাইজেশনস ওরিয়েন্তালেস (প্রাচ্য ভাষা ও সভ্যতার জাতীয় ইনস্টিটিউট) (ইনালকো) প্রফেসর এমেরিটাস মিসেস প্রফেসর ফ্রান্স ভট্টাচারিয়া অসমাপ্ত আত্মজীবনীটির ফরাসিতে Mémoires Inachevés নামে অনুবাদ করেছেন।[২০] ফরাসি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান জিংকো এডিটর এই সংস্করণটি প্রকাশ করে। বইটি প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের ৪৭তম স্বাধীনতা দিবস ও বাংলাদেশ-ফ্রান্স কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে প্রকাশিত হয়েছে। বইটি ২৬শে মার্চ ২০১৭ তারিখে ফ্রান্সের সর্ববৃহৎ বইমেলা ‘সালোন লিভর প্যারিস’-এ পরিবেশিত হয়েছে। বইটির প্রকাশনা, ভাষাগত পরিশুদ্ধতা ও সর্বাঙ্গীণ সৌষ্ঠব নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক ফরাসি রাষ্ট্রদূত সার্জ দেগালে, ইনালকোর বাংলা বিভাগের প্রধান ড. ফিলিপ বেনোয়া ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ফিলিপ রাত একযোগে কাজ করেছেন। এর উপক্রমণিকা লিখেছেন ফ্রান্সের ভূতপূর্ব পররাষ্ট্র মন্ত্রী হুবার্ট ভেদ্রিন এবং পাদটীকাসমূহ লিখেছেন ইনালকোর বাংলা ভাষা ও সভ্যতার শিক্ষক জেরেমি কদ্রন।[২১][২২]

হিন্দি অনুবাদ[সম্পাদনা]

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উদ্যোগে বর্ষীয়ান অনুবাদক ও নাট্য-সমালোচক প্রেম কাপুর হিন্দি ভাষায় दास्ताँ और भी हैं (দাস্তাঁ অউর ভী হ্যায়) নামে এর অনুবাদ করেছেন।[২৩] ২০১৭ খ্রীস্টাব্দের ৮ই এপ্রিলে নয়াদিল্লির হায়দ্রাবাদ হাউজে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২২টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই অনুষ্ঠানে হিন্দি সংস্করণের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। দিল্লির রাজকমল প্রকাশন প্রাইভেট লিমিটেড বইটি প্রকাশক করেছে।[২৪][২৫]

তুর্কি অনুবাদ[সম্পাদনা]

তুরস্কের বাংলাদেশ দূতাবাস আতাতুর্ক সুপ্রিম কাউন্সিল-এর সহায়তায় তুর্কি ভাষায় অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটির অনুবাদ প্রকাশ করেছে। এর অনুবাদ করেছে আতাতুর্ক সংস্কৃতি ও গবেষণা কেন্দ্র। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের ২৭শে মার্চ আঙ্কারাস্থ সুইস হোটেলে বাংলাদেশের ৪৮তম[২৬] স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তুর্কি সংস্করণের মোড়ক উন্মোন করা হয়।[২৭][২৮]

নেপালি অনুবাদ[সম্পাদনা]

নেপালি ভাষায় অসমাপ্ত আত্মজীবনীর যৌথভাবে অনুবাদ করছেন নেপালের সাবেক বিদেশ সচিব ও সার্কের সাবেক মহাসচিব অর্জুন বাহাদুর থাপা এবং ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাতত্ত্বের অধ্যাপক মহেশ পৌড়েল। নেপালি সংস্করণে ती अधुरा संस्मरणहरु (তী অধুরা সম্সমরণহরু) নামে এটি প্রকাশিত হয়েছে।[২৯] নেপালের বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে নেপাল অ্যাকাডেমির সহযোগিতায় এ সংস্করণ প্রকাশ করা হয়। ২০১৮ খ্রীস্টাব্দের ৮ই অক্টোবর কাঠমণ্ডুতে হোটেল ইয়াক অ্যান্ড ইয়েতির দরবার হলে এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়।[৩০][৩১]

স্পেনীয় অনুবাদ[সম্পাদনা]

স্পেনীয় ভাষায় Memorias Inacabadas নামে বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীর অনুবাদ করেছেন মারিয়া হেলেনা বাররেরা-আগারওয়াল এবং বেঞ্জামিন ক্লার্ক। তারা যৌথভাবে ইংরেজি সংস্করণ The Unfinished Memoirs থেকে এ অনুবাদ করেন। ঢাকাস্থ স্পেনীয় দূতাবাসের উদ্যোগে স্পেনীয় এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন (AECID) এর প্রকাশনা করে। ২০১৮ খ্রীস্টাব্দের ১১ই অক্টোবর গণভবনে এর মোড়ক উন্মোচন হয়।[৩২][৩৩][৩৪]

অসমীয়া অনুবাদ[সম্পাদনা]

অসমীয়া ভাষায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অসমাপ্ত আত্মজীবনী বইটির অনুবাদ করেন বিখ্যাত বাঙালি লেখক ড. সৌমেন ভারতীয়া ও ড. জুরি শর্মা। অসমীয়া সংস্করণে অসমাপ্ত আত্মজীৱনী (অখমাপ্ত আত্মজীওনী) নামটি রাখা হয়েছে। ২০১৮ সালের ২৫শে ডিসেম্বরে ভারতের আসামে ৩২তম গুয়াহাটি গ্রন্থমেলায় এর মোড়ক উন্মোচন করা হয়। বাংলাদেশ সরকার ও ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশের বিশেষ সহায়তায় গুয়াহাটির ভিকি পাবলিকেশন্স থেকে এটি প্রকাশিত হয়।[৩৫][৩৬][৩৭]

রুশ অনুবাদ[সম্পাদনা]

রুশ ভাষায় অসমাপ্ত আত্মজীবনীর অনুবাদ করেছেন রাশিয়ান একাডেমি অব সাইন্সের অন্তর্ভুক্ত ইন্সটিটিউট অব ওরিয়েন্টাল স্টাডিজের অধ্যাপক ড. ভি নমকিন।[৩৮]

মারাঠি অনুবাদ[সম্পাদনা]

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা গ্রন্থ 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী' এবার মারাঠি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। মারাঠি ভাষায় অনূদিত গ্রন্থটির নাম "অপূর্ণ আত্মকথা"। গ্রন্থটি বাংলা থেকে মারাঠি ভাষায় অনুবাদ করেন বিশিষ্ট লেখিকা,জার্নালিস্ট ও 'লোকমত' পত্রিকার ফিচার সম্পাদক অপর্ণা ভেলনকার। এটির প্রকাশক 'আনন্দ লিমায়ে'। ১২ অক্টোবর,২০২১ ভারতের মুম্বাইয়ে বাংলাদেশ উপ-হাইকমিশনে বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়। [৩৯]

ব্রেইল সংস্করণ[সম্পাদনা]

মুজিব বর্ষ উপলক্ষে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ৭ অক্টোবর ৬ খণ্ডে অসমাপ্ত আত্মজীবনীর ব্রেইল সংস্করণ প্রকাশ করা হয়, যার মোড়ক উন্মোচন করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।[৪০][৪১]

জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে[সম্পাদনা]

  • ২০২১ সালে অসমাপ্ত আত্মজীবনী নিয়ে নির্মিত হয় চলচ্চিত্র ‘'চিরঞ্জীব মুজিব'’। এটি ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর মুক্তি পেয়েছে। ভাষা আন্দোলনের পটভূমিতে নির্মিত চলচিত্রটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনের ১৯৪৯ থেকে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত চিত্রিত হয়। এটির পরিচালক জুয়েল মাহমুদ। চলচ্চিত্রটিতে বঙ্গবন্ধুর চরিত্রে আহমেদ রুবেল, বেগম ফজিলাতুন্নেছার চরিত্রে পূর্ণিমা, বঙ্গবন্ধুর বাবার চরিত্রে খায়রুল আলম সবুজ ও মায়ের চরিত্রে দিলারা জামান অভিনয় করেছেন।[৪২]

আরও দেখুন

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)